আজ বৃহস্পতিবার, ২৫শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

টেন্ডারবাজ জিকের সাথে শামীম ওসমানের খাওয়া দাওয়া

অনলাইন রিপোর্ট:

টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজির সুনির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেফতার জিকে শামীমের সঙ্গ নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের এমপি শামীম ওসমানের ভাইরাল হয়েছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে জিকে শামীমের অফিসে বসে জিকে শামীমের সাথে খাওয়া-দাওয়া করছেন শামীম ওসমান । আর এই ছবিটি প্রকাশ করছেন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ফজলুল বারী। তবে, ছবিটি সম্পর্কে বিস্তারিত তিনি কিছু লিখেননি।

জানা গেছে জিকে শামীম ঢাকায় থাকলেও নারায়ণগঞ্জের  অনেকেরই সাথে ছিলো তার সরাসরি যোগাযোগ। বিশেষ করে ঠিকাদারি কাজের সাথে যারা সম্পৃক্ত তেমন ব্যক্তিদের যোগাযোগটা ছিলো একটু বেশি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোনারগাঁ উপজেলার সন্মানদী ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত মো. আফসার উদ্দিন মাস্টারের ছেলে শামীম। আফসার উদ্দিন মাস্টার ছিলেন হরিহরদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিন ছেলের মধ্যে জি কে শামীম মেজো। বড় ছেলে গোলাম হাবিব নাসিম ঢাকায় জাতীয় পার্টির রাজনীতি করেন। সন্মানদী ইউনিয়নের বাসিন্দারা জানান, প্রাইমারি স্কুল ও হাই স্কুল পাস করার পর তাঁদের গ্রামে দেখা যায়নি। ঢাকার বাসাবো আর সবুজবাগ এলাকায় বড় হয়েছেন।তিনি সবসময় ছয়জন অস্ত্রধারী দেহরক্ষী প্রটেকশন নিয়ে চলেন। সবার হাতেই থাকে শর্টগান। গায়ে বিশেষ সিকিউরিটির পোশাক। তাদের একেকজনের উচ্চতা প্রায় ছয় ফুট। শামীম ছোটখাটো মানুষ হলেও তার ক্ষমতার দাপট আকাশসমান।

গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কিংবা যুবলীগের পার্টি অফিস, বিয়ে বাড়ি কিংবা বন্ধুর বাড়ি, যেখানেই তিনি যান, সঙ্গে থাকে অস্ত্রধারী প্রটোকল বাহিনী। ভারী অস্ত্র নিয়ে ছয়জন নিরাপত্তারক্ষী আগে-পিছে পাহারা দিয়ে তাকে নিয়ে যান। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর অবৈধ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন জি কে শামীম।

বাসাবো এলাকায় পাঁচটি বাড়ি এবং একাধিক প্লট রয়েছে শমীমের। বাসাবোর কদমতলায় ১৭ নম্বরের পাঁচতলা বাড়িটি জি কে শামীমের। এই বাড়িটি ম্যানেজার হিসেবে দেখাশোনা করেন স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. ইসমাইল হোসেন সর্দার। শামীম কয়েক বছর বাসাবোর ওই বাড়িতে বসবাস করলেও এখন থাকছেন বনানীর ওল্ড ডিওএইচএসে নিজের ফ্ল্যাটে। এবং নিজের কার্যালয় বানিয়ে বসেন নিকেতন এলাকায় একটি ভবনে। বাসাবোতে আরো রয়েছে তিনটি ভবন এবং ডেমরা ও দক্ষিণগাঁও ছাড়াও সোনারগাঁ উপজেলা, বান্দরবান ও গাজীপুরে কয়েক শ বিঘা জমি কিনেছেন তিনি।

রাজধানীর সবুজবাগ, বাসাবো, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় শামীম ঠিকাদারি কাজ করে থাকেন। শুধু তাই নয় গণপূর্ত ভবনের বেশি ভাগ ঠিকাদারি কাজ তিনি করেন। বিএনপি-জামায়াত শাসনামলেও গণপূর্তে এই শামীমই ছিলেন ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি।

এদিকে র‌্যাবের হাতে আটক হওয়া এই জিকে শামীম আলীগঞ্জ মাঠ প্রসঙ্গে শ্রমিক লীগ নেতা কাউসার আহম্মেদ পলাশকে গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন। এ ঘটনায় পলাশ ফতুল্লা মডেল থানায় ২০১৬ সালের ১২ মে নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরিও করেছিলেন। এই হুমকির নেপথ্যে ছিলো, মাঠ রক্ষার্থে উচ্চ আদালতে মামলা করেন পলাশ। আর এ কারণে আটকে যায় অফিসার্স কোয়ার্টারের কাজ।

এ প্রসঙ্গে কাউসার আহম্মেদ পলাশ বলেছেন, ২০১৬ সালের ১২ দুপুর পৌনে দুইটায় এবং একইদিন রাত ৯ টার দিকে যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা পরিচয়ে জিকে শামীম হুমকি দিয়েছিলেন। হাইকোর্টে আলীগঞ্জ মাঠ নিয়ে মামলা চলছিলো। সেটি উঠিয়ে নিতে তিনি হুমকি দেন। একই সাথে তিনি বলেছিলেন, হাইকোর্টে আসলে প্রকাশ্যে গুলি করে মেরে ফেলবেন।

 

সর্বশেষ সংবাদ